অনলাইন ডেস্ক :
কুমিল্লার মুরাদনগরে মায়ের সামনে হাত পা বেঁধে রাজু চন্দ্র নামের এক কিশোরকে নির্মমভাবে নির্যাতনের অভিযোগে স্থানীয় এক আওয়ামী লীগ নেতাকে গ্রেপ্তারের পর কারাগারে পাঠিয়ে পুলিশ। নির্যাতনের ওই ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে ক্ষোভ ও নিন্দার ঝড় ওঠে।
নির্যাতনের শিকার কিশোরের বড়ভাই সজল চন্দ্র বিশ্বাস বৃহস্পতিবার বিকালে মুরাদনগর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। পুলিশ ওই রাতেই অভিযুক্ত আওয়ামী লীগ নেতা আবু তাহেরকে নারায়ণগঞ্জে তার মেয়ের শ্বশুর বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করে।
নির্যাতনের শিকার কিশোর উপজেলার কাজিয়াতল গ্রামের রাখাল চন্দ্রের ছেলে। আর অভিযুক্ত আবু তাহের কন্টাক্টর উপজেলার দারোরা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত বুধবার বিকালে রাজু চন্দ্র বিশ্বাস মায়ের সাথে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে নিজ ঘরের আসবাবপত্র ভাঙচুর করে। এ সময় আবু তাহের কৌতূহলবশত রাজুদের বাড়ি যান। রাজুকে উত্তেজিত অবস্থায় দেখে শীতের মধ্যে তার জামা কাপড় খুলে হাত-পা বেঁধে বাড়ির আঙ্গিনায় ফেলে রাখেন আবু তাহের। এতে রাজু ক্ষীপ্ত হয়ে বাঁধা অবস্থায় আবু তাহেরকে গালমন্দ করে। আবু তাহের উত্তেজিত হয়ে রাজুকে তার মায়ের সামনে নির্যাতন করেন। তখন উপস্থিত কেউ গোপনে নির্যাতনের দৃশ্য মোবাইলে ধারণ করে। পরে তা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে ভিডিওটি ভাইরাল হয়।
ভিডিওতে দেখা যায়, রাজুকে হাত-পা বেঁধে মুখে ও বুকে উপর্যুপরি লাথি মারছেন আবু তাহের। রাজু চিৎকার করে কান্না করলেও মেলেনি নিস্তার।
রাজুর বড়ভাই সজল চন্দ্র অভিযোগ করে বলেন, ভাইয়ের ওপর এমন অমানবিক নির্যাতনের বিচার চেয়ে এলাকার গণ্যমান্যদের দুয়ারে দুয়ারে ঘুরেছি। তবে আবু তাহের প্রভাবশালী হওয়ায় কেউ বিচার করেনি। পরে বাধ্য হয়ে মামলা করি।
এ বিষয়ে মুরাদনগর থানার ভারপ্রপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) একেএম মনজুর আলম জানান, মামলার পর বৃহস্পতিবার রাতেই মুরাদনগর থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) নাহিদ আহাম্মেদের নেতৃত্বে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই মোরশেদসহ একদল পুলিশ অভিযান চালিয়ে নারায়ণগঞ্জ থেকে আবু তাহেরকে গ্রেপ্তার করে। শুক্রবার দুপুরে তাকে কুমিল্লা জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।
You must be logged in to post a comment.