গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার মাঝুখান এলাকায় অন্যের গরু জবাই করে মৌচাক ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি মোশারফ হোসেন মেম্বার সহযোগীদের নিয়ে দিনভর আনন্দ উৎসব পালন করেছেন। ওই ঘটনায় এলাকায় থমথমে পরিবেশ বিরাজ করছে।
এলাকাবাসী ও ভুক্তভোগী পরিবার সূত্রে জানা যায়, গত এক মাস পূর্বে উপজেলার মাঝুখান এলাকায় আবু তালেবের বাড়ীতে একটি লাল রংয়ের গরু আসে। যার আনুমানিক মূল্য প্রায় ৪০ হাজার টাকা। কোন মালিক না পেয়ে আবু তালেব নিজের কয়েকটি গরুর সঙ্গে ওই গরুটিও লালন পালন করে আসছেন। পরে আবু তালেবের বাড়ীর ভাড়াটে রাজা মিয়া তার গরুগুলো দেখা শোনা করে। পারিবারিক সমস্যার কারণে কয়েক দিন আগে রাজাকে তার বাড়ি থেকে বের করে দেন আবু তালেব। পরে রাজা মিয়া একই এলাকার বাসিন্দা ও মৌচাক ইউনিয়নের যুবলীগের সহ-সভাপতি সোহাগ হোসেনের বাড়িতে বাসা ভাড়া নিয়ে বসবাস শুরু করে।
তার দাপটে ভাড়াটে রাজা মিয়া গত বৃহস্পতিবার ভোররাতে গরুটি চুরি করে নিয়ে যায়। সকালে গরুটি না পেয়ে অনেক খোঁজাখুঁজি করার পর এক পর্যায় জানতে পারে ওই ভাড়াটে রাজা মিয়া তার গরুটি নিয়ে গেছে। আবু তালেব গরুটি আনতে গেলে রাজা মিয়ার বাসার মালিক যুবলীগের নেতা সোহাগ তাকে ভয়ভীতি দেখিয়ে ফিরিয়ে দেন। পরে দুপুরে ওই এলাকার প্রভাবশালী ইউপি সদস্য ও মৌচাক ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি মোশারফ হোসেনের নেতৃতে গরুটি জবাই করে। পরে ওই গরুর মাংস দিয়ে খিচুরী রান্না করে ওই যুবলীগের সভাপতি তার সহযোগীদের নিয়ে ভুড়ি ভোজ করে। এ উপলক্ষে তারা দিনভর আনন্দ উল্লাসে মেতে উঠেন। তবে ওই গরুর পালিত মালিক আবু তালেব জানান, গরুটি চুরি করে নিয়ে জবাই করে খেয়ে ফেলেছে। কিছু কইয়াও পারি না, মোশারফ মেম্বার আমারে মারবো।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ওই মৌচাক ইউনিয়নের যুবলীগের সভাপতি মোশারফ হোসেন সাংবাদিকদের উপর ক্ষিপ্ত হয়ে বলেন, “আমি মন্ত্রীর ফোন ই ধরি না, আপনাদের ফোন কি ধরবো। গরু জবাই করে মাংস খেয়েছি, তোমরা সাংবাদিকরা যা পার করো”। এছাড়া গরুর মালিক না থাকায় ১০ হাজার টাকা দাম ধরে জবাই করে টাকাগুলো মাদ্রাসায় দান করেছি। ইউএনও’র কাছে অনুমতি নিয়েই এটা করেছি। তবে মাঝুখান মাদ্রাসার কোষাধক্ষ্য আতাউর রহমান জানান, মাদ্রাসার তহবিলে কোন টাকা জমা হয়নি।
উপজেলা আওয়ামী যুবলীগের সভাপতি মোঃ হিরো মিয়া বলেন, “যুবলীগ নেতা মোশারফ হোসেনের নামে যে অভিযোগ উঠেছে, তা খতিয়ে দেখা হবে। এছাড়া ঘটনাটি প্রমাণ হলে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে”।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার কাজী হাফিজুল আমিন জানান, বিষয়টি আমার জানা নেই। বিষয়টি আমাকে কেউ অবগত করেনি।
You must be logged in to post a comment.